আজকের দিনে মন খারাপ হওয়া নতুন কিছু নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই দিনটা আসলে মন ভীষণ উদাস হয়ে যায় । সত্যি কথা বলতে , ছোটবেলা থেকে বড়বেলায় আসার পর এই ঘটনা প্রায় ঘটে । কিছু একটা ছোটবেলায় ছিল যা এখন ভীষণ মনে পরে।
ছোটবেলায় আমি বাবাই এর সাথে ঠাম্মার বাড়ি(Talukdar house) যেতাম । আমি দৌড়োতে দৌড়োতে গিয়ে জড়িয়ে ধরতাম। ওনাকে দেখে মনে হতো -কোন এক রানী সিংহাসনে বসে আছেন। তার চারিদিকে ঘিরে থাকতো আমার খুড়তুতো পিসতুতো ভাই বোনেরা ; উনি এমন মানুষ ছিলেন যিনি পরকেও আপন করে নিতে পারতেন। উনি সারা জীবনে কতো মানুষকে নতুন জীবন দিয়েছিলেন তা হয়তো নিজেও জানতেন না। এক সময় আমাদের জমিদার বাড়িতে নিচু জাতি বা অন্য ধর্মের মানুষের প্রবেশ নিসিদ্ধ ছিল। উনি সমস্ত সংকীর্ণতার বেড়া ভেঙ্গে ছিলেন। বাড়িতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রবেশের পথ খুলে দেন।
কথা হচ্ছিল ভাইফোঁটার । সকলকে ফোঁটা দেওয়া হত। দাদারা কেও দশ, কেও কুড়ি টাকা দিত। সেটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আইস ক্রিম বা কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতাম সবাই মিলে। তার পর পাঁচিল বেয়ে একবার গার্লস স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করেছিলাম । অনির্বাণ আর অভিষেক -আমার চেয়ে ৪ বছরের বড় , দুষ্টুমি করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে ঠা ম্মার কাছে নালিশ করি । তার পরে দুই জনের কি হয়েছিল তা ওদের সারা জীবন মনে থাকবে। কান ধরে উঠ বস করিয়েছিলেন। উনি আমার জন্য নতুন জামা লুকিয়ে রাখতেন কাওকে না দেখিয়ে ।চুপটি করে দিয়েদিতেন ।
দুপুরে জমিয়ে খাওয়া । পোলাও , গলদা চিংড়ি , মাংস আরও কতো কি! বাড়িতে কি হৈ চৈ । দুপুরে লড়াই হতো কে ঠা ম্মার পাশে শোবে।
বাবাই, জ্যাঠামশাইরা , দাদু, ছোট দাদু, কাকুরা খেলার আলোচনা , তর্ক বিতর্কে ব্যস্ত থাকতেন। ইস্ট- বেঙ্গল , মোহনবাগান নিয়ে বিতর্ক ছিল তুঙ্গে ।
সোনামা মানে আমার মেজ জেঠীর আদর খেতে খুব ভাল লাগত।
আমি আর অভিষেক দুষ্টুমির নতুন নতুন উপায় খুঁজতাম । ও মেঝেতে পাওডার ফেলে রাখত । আমারা বিছানার তলায় লুকিয়ে থাকতাম 'দেখি কে আগে পরে' । আমাদের দুষ্টুমি থামানোর জন্য লাল কাকা আমাদের বই এর দোকানে নিয়ে যেতেন । আর প্রচুর গল্পের বই কিনে দিতেন । ব্যাস আমরা চুপ । আমাদের কাকিমা শান্ত ভাবে বই পড়তে দেখে বলতেন, "এরা কে? এতো শান্ত ! এদের তো চেনাই যায়না !"
মহুয়া দিদি কে দেখে ভাবতাম-কি সুন্দর দেখতে ও ! ওর মুখে বিউটি স্পট ছিল। আমি পেন্সিল দিয়ে সে রকম আঁকার চেষ্টা করতাম। সবাই কি হাসত ।
বিকেলে একটা ছোটখাটো অনুষ্ঠান হতো ;যে যা পারে তা তাকে করে দেখাতে হতো ; কেও নাচ , কেও গান, কেও তবলা । মেজ জ্যাঠামশাই সব সময় একটাই গান আমাকে গাইতে বলতেন-" এই লভিনু সঙ্গ তব"। ঠাম্মা বাবাই কে বলতেন , "ওরে মিলন, মিমিকে classical music শেখা ! ওর গলা ভীষণ ভাল।"
সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি ফিরতে বড় মন খারাপ করতো।
আজ অনেক বছর কেটে গেছে । আজ ঠাম্মা , দাদু, লাল কাকা, মেজ জ্যাঠামশাই কেও নেই। রীতিনীতি আজও আগের মতো কিন্তু নেই সে আন্তরিকতা , সেই ভালোবাসার ছোঁয়া , না সেই শিশুসুলভটা ।
আমরা বড়ো হয়েগেছি । নিজের নিজের কর্ম জীবনে ব্যস্ত ।
এই দিনে মন উদাস থাকার কারণ হয়তো এই নয় যে আমার কোন ভাই নেই। যা নেই , তা নিয়ে আফসোস করা অযৌক্তিক । মন খারাপ হয় পুরনো দিনগুলিকে হারিয়ে ।
ছোটবেলায় আমি বাবাই এর সাথে ঠাম্মার বাড়ি(Talukdar house) যেতাম । আমি দৌড়োতে দৌড়োতে গিয়ে জড়িয়ে ধরতাম। ওনাকে দেখে মনে হতো -কোন এক রানী সিংহাসনে বসে আছেন। তার চারিদিকে ঘিরে থাকতো আমার খুড়তুতো পিসতুতো ভাই বোনেরা ; উনি এমন মানুষ ছিলেন যিনি পরকেও আপন করে নিতে পারতেন। উনি সারা জীবনে কতো মানুষকে নতুন জীবন দিয়েছিলেন তা হয়তো নিজেও জানতেন না। এক সময় আমাদের জমিদার বাড়িতে নিচু জাতি বা অন্য ধর্মের মানুষের প্রবেশ নিসিদ্ধ ছিল। উনি সমস্ত সংকীর্ণতার বেড়া ভেঙ্গে ছিলেন। বাড়িতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রবেশের পথ খুলে দেন।
কথা হচ্ছিল ভাইফোঁটার । সকলকে ফোঁটা দেওয়া হত। দাদারা কেও দশ, কেও কুড়ি টাকা দিত। সেটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আইস ক্রিম বা কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতাম সবাই মিলে। তার পর পাঁচিল বেয়ে একবার গার্লস স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করেছিলাম । অনির্বাণ আর অভিষেক -আমার চেয়ে ৪ বছরের বড় , দুষ্টুমি করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে ঠা ম্মার কাছে নালিশ করি । তার পরে দুই জনের কি হয়েছিল তা ওদের সারা জীবন মনে থাকবে। কান ধরে উঠ বস করিয়েছিলেন। উনি আমার জন্য নতুন জামা লুকিয়ে রাখতেন কাওকে না দেখিয়ে ।চুপটি করে দিয়েদিতেন ।
দুপুরে জমিয়ে খাওয়া । পোলাও , গলদা চিংড়ি , মাংস আরও কতো কি! বাড়িতে কি হৈ চৈ । দুপুরে লড়াই হতো কে ঠা ম্মার পাশে শোবে।
বাবাই, জ্যাঠামশাইরা , দাদু, ছোট দাদু, কাকুরা খেলার আলোচনা , তর্ক বিতর্কে ব্যস্ত থাকতেন। ইস্ট- বেঙ্গল , মোহনবাগান নিয়ে বিতর্ক ছিল তুঙ্গে ।
সোনামা মানে আমার মেজ জেঠীর আদর খেতে খুব ভাল লাগত।
আমি আর অভিষেক দুষ্টুমির নতুন নতুন উপায় খুঁজতাম । ও মেঝেতে পাওডার ফেলে রাখত । আমারা বিছানার তলায় লুকিয়ে থাকতাম 'দেখি কে আগে পরে' । আমাদের দুষ্টুমি থামানোর জন্য লাল কাকা আমাদের বই এর দোকানে নিয়ে যেতেন । আর প্রচুর গল্পের বই কিনে দিতেন । ব্যাস আমরা চুপ । আমাদের কাকিমা শান্ত ভাবে বই পড়তে দেখে বলতেন, "এরা কে? এতো শান্ত ! এদের তো চেনাই যায়না !"
মহুয়া দিদি কে দেখে ভাবতাম-কি সুন্দর দেখতে ও ! ওর মুখে বিউটি স্পট ছিল। আমি পেন্সিল দিয়ে সে রকম আঁকার চেষ্টা করতাম। সবাই কি হাসত ।
বিকেলে একটা ছোটখাটো অনুষ্ঠান হতো ;যে যা পারে তা তাকে করে দেখাতে হতো ; কেও নাচ , কেও গান, কেও তবলা । মেজ জ্যাঠামশাই সব সময় একটাই গান আমাকে গাইতে বলতেন-" এই লভিনু সঙ্গ তব"। ঠাম্মা বাবাই কে বলতেন , "ওরে মিলন, মিমিকে classical music শেখা ! ওর গলা ভীষণ ভাল।"
সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি ফিরতে বড় মন খারাপ করতো।
আজ অনেক বছর কেটে গেছে । আজ ঠাম্মা , দাদু, লাল কাকা, মেজ জ্যাঠামশাই কেও নেই। রীতিনীতি আজও আগের মতো কিন্তু নেই সে আন্তরিকতা , সেই ভালোবাসার ছোঁয়া , না সেই শিশুসুলভটা ।
আমরা বড়ো হয়েগেছি । নিজের নিজের কর্ম জীবনে ব্যস্ত ।
এই দিনে মন উদাস থাকার কারণ হয়তো এই নয় যে আমার কোন ভাই নেই। যা নেই , তা নিয়ে আফসোস করা অযৌক্তিক । মন খারাপ হয় পুরনো দিনগুলিকে হারিয়ে ।