Searching my own sky

Searching my own sky

Wednesday, November 30, 2011

শুধু প্রশ্ন !

              সুখ দুঃখ মেশানো এ এক অদ্ভুত অনুভূতি,
         কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক , এ যেন এক ভ্রান্তি ;
                  আলো অন্ধকার মেশান চারিদিক ,
                       দিন না রাত্রি পাইনা বুঝে,
                     শুধু ছুটে বেড়াই দিক বিদিক;
           জানালার বাইরে তাকাই দেখি সেই পাখীগুলো,
           নীল আকাশের মুক্ত প্রাঙ্গণে  উড়ে বেড়ায় শুধু ,
                   তাদের বাধা নেই যে কোনও । 
          দিবারাত্রি নিজের সাথে করি "যুদ্ধ যুদ্ধ " খেলা!
কে হারল? কেই বা জিতল? শুধু এই প্রশ্ন করি নিজেকে সারা বেলা।
             প্রশ্ন করা যেন হয়ে উঠেছে একটা নেশা।
এক দিন সব প্রশ্নের পাব জবাব , শুধু এতটুকু আশা ।




Saturday, November 26, 2011

ভাল থাকবেন!

   আজ শনিবার বলে ভাবলাম grocery র জন্য দিনটা উপযুক্ত । আগামী সপ্তাহে এক দিন ও ছুটি নেই। তাই আজকের দিনটা ছাড়া উপায় নেই।
সেই departmental store  এ শুধু একটা জিনিস ই বিরক্তিকর ! সেই সেলস গার্ল । কখনো "এটা নাও" , কখনো  ওটা । "এটা ব্যাবহার করলে তোমাকে আরও সুন্দর লাগবে"। সেখানে ঢুকলেই সে এসে দাঁড়ায় আমার পাশে আর শুরু করে তার কথা । এই করে প্রচুর টাকা প্রায় সব মাসেই পকেট থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মুখের ওপর কারো "না" বলতে পারিনা। সেটিই সমস্যা ।
আজ সেখানে গিয়ে দেখলাম উনি ফোনে কথা বলতে ব্যাস্ত । ভাবলাম বাঁচা গেল ! আমার কেনা কাটা তাড়াতাড়ি সেরে পালাতে চাইছিলাম ।
ঠিক তখনই আমার পাশে এসে দাঁড়াল সে।  আমার পার্সটার দিকে তাকালাম। "আহারে গেল সব!"

সে বলল, "এর পরের মাস থেকে আর আমি থাকবনা। কে যে তখন তোমাকে সব জিনিসগুলো দেবে? আমি মুম্বাই যাচ্ছি । আমার ৬ বছরের ছেলের সাথে কথা বলছিলাম। খুব কান্নাকাটি করছে। আমার ক্যান্সার হেয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য যাচ্ছি ।"
মনে হল চোখটা তার ভিজে গেল কথা বলতে বলতে । কোণায় চলে গেল। আজ কিছু বেচতে চাইল না। আমি পেছন ঘুরে বললাম, "একটা ভাল moisturizer দিন তো ।" আজ খুব খুশী হয় সে।

Counter এ bill payment করে জিনিসগুলো নেবার আগে সেই মহিলাটির কাছে গিয়ে বলি, " আপনি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন । খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে আবার এখানে দেখতে চাই । আপনি না থাকলে আমাকে বেস্ট প্রোডাক্ট কে দেবে বলুন তো ?ভাল থাকবেন।"

Saturday, November 19, 2011

ফালতু

            স্কুল এর Happy fest এর জন্য তখন ভীষণ ব্যস্ত আমি। ক্লাস এ ওদের কিছু লিখতে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে নিজের বাকি কাজগুলো করতে থাকি। না হলে সে দিন ও বাড়ি ফিরতে রাত হত।
              কিছুক্ষণ পরে দেখি সে আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। একেবারে চুপচাপ । "চুপচাপ" শব্দটা ঠিক তার ওপর  মানায়না। সারাক্ষণ ওর চিৎকার আর দুষ্টুমি , আর কিছু অযৌক্তিক বোকা বোকা কথা আর কাজ। সব জিনিসের একটা বোকা বোকা অবান্তর যুক্তি থাকে তার। জানিনা কোন জগতে থাকে। তবে তার একটা আলাদা জগৎ  তো রয়েইছে। সবাই ওকে নিয়ে মজা করে। সবচেয়ে বেশি বকা সেই খায়।  সায়ন্তিকে খুব ভালবাসে । কেও ওর সাথে সাধারণত  বন্ধুত্ত করতেও চায়না ।হয়তো তার কিছু অযৌক্তিক কথাবার্তা বা উটকো স্বভাবের জন্যে।
             আমি জিজ্ঞেস করি , "লেখা শেষ হয়েছে আয়েশা ?" সে তখনও চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। তাকিয়ে দেখি ও  কাঁদছে । কি  হল? সে কেঁদেই চলেছে। আমাদের স্কুল হেড আমার কাজ দেখতে এসেছিলেন তাকে কাঁদতে দেখে উনি বলে উঠলেন , "Don't you know that tears make you weak? Now stop crying and go your class, young lady!" কিন্তু একটা বছর ৯ বা ১০ এর মেয়েকে সেই কথাগুলি যে খুব একটা প্রভাবিত করলনা সে টা স্পষ্ট বোঝা গেল। তার কান্না থামলোনা । একটা বাচ্চাকে কিছু বোঝাবার জন্য বাচ্চাই হতে হয় । তাই আমিও ওর ভাষাতেই জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু আজ কোনোভাবেই যেন তাকে থামানো যাচ্ছেনা।
              ক্লাস এ এসে  জিজ্ঞেস করি, "কি  হয়েছে? ও কাঁদছে কেন?" তখন কেও কিছু না বললেও পরে পুরো ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়।


            সায়ন্তি হল মূল কারণ। এক সময় দুই জনে ভাল বন্ধু ছিল। Best Friends. আজ সায়ন্তি আর ওর দিকে ফিরেও তাকায়না। সে "সোমদত্তা" "পারমিতা" দের মত বন্ধুদের পেয়ে গেছে। আজ আয়েশা টিফিনে ওর পছন্দের লাঞ্চ নিয়ে আসলে সে খায়না। বলে , "ও সব আমি খাইনা! " আয়েশা ভীষণ ভাল ছবি আঁকে । competition এ ফাস্ট প্রাইজ জিতে সায়ন্তিকে দেখাতে আসলে সে কিছু না বলে চলে যায় । সে দিন সে কাঁদছিল কারণ , আবার সায়ন্তির সাথে কথা বলতে গেলে সোমদত্তা তাকে বলে , "আমরা তোর মত আলতু ফালতু লোকেদের সাথে মিশিনা।"
             দুই দিন আগে ক্লাস এ কপি চেক করছিলাম। আয়েশা এসে বলে,
"Will you scold me if I request you something?"

"No I won't! Tell me what do you want?"

"Will you be my best friend? I don't need them."

"Why not? sure!"

"Hey listen everyone! I don't need anyone because from today ma'am is my best friend!"

আমি ধমক দিয়ে সায়ন্তিকে বলতে পারি -"যাও কথা বল ওর সাথে।" শিক্ষিকা হিসেবে এতটুকু আদেশ করাই  যায় কিন্তু করিনি । এই ক্ষেত্রে জোর করা চলেনা । আমি সায়ন্তিকে বলি, " তোমার ওর সাথে এমনটি করা হয়তো উচিৎ নয় ।" সে বলে,"কিন্তু ম্যাম , ও একেবারে ফালতু । ফালতু কথা বলে , ফালতু কাজ করে ।"
শুনেছি ও বড়ই অভিমানী । ওর মা বলেছিলেন, " একদিন রাত্রে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পার্ক বেঞ্চে শুয়ে ছিল। কারণ মনে হয়েছিল ওর কেও নেই।"  জানিনা কেন মনে হয় ও ভাবছে সবার থেকে ও পিছিয়ে যাচ্ছে। আজকাল একেবারে পাল্টে গেছে। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীটা ই ওকে পাল্টে দিয়েছে। জানলার ধারে একা দাঁড়িয়ে থাকে। কিংবা আমার পাশে বসে আমার কাঁধের ওপর মাথা দিয়ে থাকে। আমাকে বলে, "তুমি কিন্তু সায়ন্তিকে কিছু বলবেনা। ওর দয়ার আমার প্রয়োজন নেই। ও এখনও জানেনা, ভবিষ্যতে প্রতিটি মুহূর্তে  হাজার হাজার "সোমদত্তা" ওর জন্য অপেক্ষা করছে।

ওর সাথে আরও একজনের মিল খুঁজে পাই। পুরোপুরি না হলেও বেশ অনেকটাই । এক অতি সাধারণ মেয়ের। যে বিদেশে থাকেনা। থাকে একটা ছোট্ট শহরে। যার কোন "বিদিশি" ডিগ্রী নেই। যার আয়েশার মতই কোন মূল্য নেই। এই নতুন বন্ধুর মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেলাম। আমরা দুই জনেই ভীষণ
                                                                
                               "ফালতু!"






Friday, November 18, 2011

নবান্ন

                 প্রতিদিনের মত রোজকার ব্যাস্ততা । নতুন কিছুই নয়। এর মধ্যে কোথায় কি হচ্ছে তা জানার সময় নেই। ব্যাস্ততার  মধ্যেও  খবর শোনার একটু সময় বের করি আর কি-দেশ, বিদেশ , রাজ্য , রাজনীতি , খেলাধুলা ইত্যাদি । সবই একঘেয়ে। দিনের শেষে সেই ক্লান্ত শরীর কোন কিছু ভাবার অবকাশ রাখে না।

আজও ঠিক  একই । সব কিছু রুটিন অনুযায়ী চলছিল।  হঠাৎ  আমার এক ছাত্র বলে  উঠল - "ম্যাম, আজ জান কি? আজ নবান্ন!"  শুনে অবাক হলাম আর তার সাথে বেশ ভাল ও লাগল ; কারণ , এই প্রজন্মের ছোট শিশুরা এই শব্দটা জানে। তবে হ্যাঁ , তাদের সংখ্যাটা খুব কম ।

               "নবান্ন" শব্দটা আবার আমাকে অতীতের কথা ভাবতে বাধ্য করল। আজ থেকে অনেক বছর আগে, এই দিনে কি হত! আমি তখন আমার ছাত্রদের মতই ছোট । স্কুল ছুটির পরে গেটে বাবা বা মায়ের জন্য অপেক্ষা করতাম। বাবাই এই দিনে এসে বলতেন চল তাড়াতাড়ি ঠাম্মা বাড়ি যেতে হবে। ব্যাস কি আনন্দ! ঠাম্মার বাড়ি গিয়ে দেখি কত লোকজন !  বড় পুজো হত। আমার জ্যাঠতুত , কাকাত ভাই বোনরাও স্কুল কলেজ থেকে ফিরত। খুব মজা হত।ঠাম্মা আমাকে কত আদর করে খাওয়াতেন।

কত রকমের পদ। কি সুন্দর রান্না! তার যেন আলাদাই স্বাদ !আবার সন্ধেবেলায় বাড়ি ফিরে আসতাম। স্কুলে গল্প করতাম যা যা হয়েছে।
আজ আর "নবান্ন" নিয়ে ভাবার সময় নেই। কারও  মনেই নেই। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে দু বেলা দু পেট খেতে পেলেই যথেষ্ট ! নতুন অন্ন না কি পুরনো - তাতে কি যায় আসে? আমি সকালে কি খেয়ে বেড়ই নিজেরই ্মনে  থাকেনা। সবাই ছুটে চলেছি । পুরনো জিনিসগুলোকে অনেক পেছনে ফেলে।
               

Sunday, November 13, 2011

ভগবান কি সত্যি আছে?

           উনি কি সত্যিই আছেন?
যাকে দিয়েছ , সব দিয়েছ , যাকে দাওনি, কিছুই দাওনি ,        
            করে রেখেছ নিঃস্ব !

Sunday, November 6, 2011

            সুখী হবার উপায়, চোখ বন্ধ করে রাখ;
দেখেও দেখনা কিছু, শুনেও শুননা , বোলো না  বা ভেবনা ;
          যত অন্যায় হোক না কেন, ফিরেও তাকিও না,
নিজের আত্মায় যতই পড়ুক চাপ,
যতই প্রশ্ন আসুক মনে , চুপটি করে থাকতে বল তোমার বিবেককে ;
নিরব দর্শকের ন্যায় শুধু দেখে যাও , আর মজা করো ,
সুখী হবার উপায় , চোখ বন্ধ করে রাখ।

Saturday, November 5, 2011

অধিকার

            আমি আইনের ছাত্রী না হলেও আইনের বিষয়ে কিছু  জ্ঞান হয়তো রাখি। দেশের একজন "নাগরিক" হিসেবে  এতটুকু অন্তত  পক্ষে জানা উচিত বলে আমি মনে করি। "শিক্ষার অধিকার" আমাদের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সংবিধান আমাদের অনেক অধিকার দিয়ে থাকে কিন্তু কোনটা মানা হবে বা কোনটা মানা হবেনা সে টা জনগণের মর্জির ওপর নির্ভর করে। এদেশে সকলেরই কি শিক্ষার অধিকার আছে? "শিক্ষার" কথা আপাতত ছেড়ে দিলাম। এদেশের দরিদ্র  মানুষের স্বপ্ন দেখার অধিকারই বা  কতটুকু সে ব্যাপারেও আমার সন্দেহ আছে।

        স্কুলে ১৪ তারিখে একটা বড় অনুষ্ঠান আছে ।তাই এখন নিশ্বাস নেবার সময় টুকু আমাদের নেই। আমরা আজ মীটিং এ ছিলাম। স্কুল আজ প্রায় ফাঁকা ,শনিবার । তাই স্কুল হেড এর ঘরে বসেই দরজা খুলে মীটিং হচ্ছিল । বিভিন্ন ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিল । বড় বড় ভিআইপি , মিডিয়া আসবে। আর mentor group এর সদস্যরা ও থাকবেন।
হঠাৎ  খোলা দরজা দিয়ে বাইরের দিকে চোখ চলে যায় । যা দেখি তা দেখে মনে হল, কেন দরজাটা খোলা ছিল! বন্ধ থাকলে হয়তো সে দৃশ্য দেখতে হতোনা । এমন কিছু নতুন না হলে ও এসব ঘটনা কিছু প্রশ্ন চিহ্ন লাগিয়ে দেয় আমাদের সমাজব্যাবস্থার ওপর। 

            দেখি এক মহিলা, পরনে জীর্ণ মলিন শাড়ি । হাতে প্লাস্টিকের প্যাকেট, উসকো  খুসকো  চুল ;সাথে একটা ছোট্ট ছেলে। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে প্রাণপণে কিন্তু দারোয়ান কিছুতেই ঢুকতে দেবেনা। বলছে, "ও খুব ভাল পড়াশোনায় জান? ও সব পারে..."  দারোয়ান বলে, "সে হোক ! তাতে কি? যাও অন্য কোথাও !" তাড়িয়ে দেয়।

      দারোয়ানের বলা উচিত ছিল, "পড়াশোনায় ভাল মন্দ হওয়াতে কিছু যায় আসেনা,  পকেটে টাকা আছে? "
"মৌলিক অধিকার" "টধিকার" ওসব  চুলোয় যাক , টাকা দিয়ে শিক্ষা কেনাটাই আজ মৌলিক অধিকার।
আমার ভূমিকা কি?

অবশ্যই নীরব দর্শকের ।