Searching my own sky

Searching my own sky

Monday, December 26, 2011

ইচ্ছে


                                             ছোট্ট পাখিটার ইচ্ছে ছিল -সে একদিন  উড়তে শিখবে ।
                                                    নীল আকাশে উড়তে উড়তে চলে যাবে বহু দুরে,
                                                           -স্বাধীনতার এক অদ্ভুত অনুভুতি।
                                  কিন্তু তার ভাল লাগত না যখন তার মা তাকে বাইরে যেতে মানা করত। 
                                       "বাইরে যেতে নেই! বাইরের জগতটা খুব খারাপ।"
                                                সে ভাবত, "তাতে কি? তাই বলে কি উড়বো না?"
                                                        একদিন মাকে না বলে সে গেল চলে;
                                              ডানা মেলে উড়তে শুরু করল খোলা আকাশে।
                                 আজ সে স্বাধীন ; কেও তাকে থামাতে পারবেনা,
                                                           কেও মানা করার নেই।
                          হঠাৎ একটা বিশাল শকুন তেড়ে আসে তার দিকে। সে পালাতে থাকে প্রান বাঁচিয়ে।
                                     "মা" "মা" বলে চিৎকার করে কিন্তু কেও শুনতে পায়না তার আওয়াজ ।
                                                          শকুনটা তার পেছন আর ছাড়ে না।
                                         অনেক কষ্টে পিছু ছাড়িয়ে একটা গাছের ডালে এসে
                                                                    পাতার আড়ালে লুকোয়।
                                                       একটা তির এসে বিধল তার বুক। 
                                          একটা শিকারি শিকারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল বনে।
                                     রক্তাক্ত শরীরটা মাটিতে এসে পরে; ছটফট করতে থাকে সে।
                        উড়ে পালাবার চেষ্টা করে, কিন্তু শিকারিটা এসে তার সেই ডানাদুটো  কেটে ফেলে।
                                        প্রাণটা বেরোবার আগে তার মনে পরে মায়ের কথা।
                                শিকারিটা তার মৃতদেহ নিয়ে মনের আনন্দে বাড়ি ফিরে যায় ।






Wednesday, December 7, 2011

ভোজ উৎসব

                                খাওয়ার জন্য লাগেনা কোন যুক্তি ,
                             উদ্দেশ্য একটাই , সে হল 'রসনা তৃপ্তি ।"
                         সে হকনা দেশি , বিলিতি বা মোগলাই রান্না ,
                        জিভে যে আসে জল, "আরও চাই" "আরও চাই "
                                              শুধুই বায়না।
                       চাইনিজ , কাটলেট , আইসক্রিম বা বিরিয়ানি ,
                            শুক্তো বা পস্তো , রসগোল্লা বা চাটনি ।
হোকনা তা পিজ্জা বা  সে হোকনা পাস্তা, এর থেকে বাঁচার নেই যে কোন রাস্তা।
                         পোলাও , পায়েস , মাছ হোক বা সবজি,
                            খেয়ে যাও , খেয়ে যাও ,ডুবিয়ে কবজি।
                     সব কাজ পরে হবে আগে হবে "রসনা তৃপ্তি "
                             কারণ খাবার জন্য লাগেনা কোন যুক্তি! 

Sunday, December 4, 2011

গন্তব্য

                               নিজের গন্তব্য কি? কি জানি? সেই পথ কি কম খুঁজেছি ?
                                       বছরের পর বছর , মাসের পর মাস, দৌড়ে বেরিয়েছি,
                                                               তবু পাইনি খুঁজে ।
                                          শেষে ক্লান্ত হয়ে বলি , "আর নয়।অনেক হয়েছে।
                                      পথকে আর খুঁজবনা আমি, পথই আমাকে নেবে খুঁজে। "
                                               সেদিন থেকে বন্ধ করেদি সব পাগলামি।
                                          এক দিন দেখি সেই পথ ই যেন হাতছানি দিল।
                                                           ডাকল  নিজের কাছে ।
                                 কিন্তু আজও নিজের শেষ গন্তব্যস্থানটা কি জানতে বড় ইচ্ছে হয়।
                      কিন্তু সে এক কথা এখন ও বলি, "সেই আমাকে নেবে খুঁজে , আমি খুঁজবোনা তাকে।"




               
                                 

Wednesday, November 30, 2011

শুধু প্রশ্ন !

              সুখ দুঃখ মেশানো এ এক অদ্ভুত অনুভূতি,
         কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক , এ যেন এক ভ্রান্তি ;
                  আলো অন্ধকার মেশান চারিদিক ,
                       দিন না রাত্রি পাইনা বুঝে,
                     শুধু ছুটে বেড়াই দিক বিদিক;
           জানালার বাইরে তাকাই দেখি সেই পাখীগুলো,
           নীল আকাশের মুক্ত প্রাঙ্গণে  উড়ে বেড়ায় শুধু ,
                   তাদের বাধা নেই যে কোনও । 
          দিবারাত্রি নিজের সাথে করি "যুদ্ধ যুদ্ধ " খেলা!
কে হারল? কেই বা জিতল? শুধু এই প্রশ্ন করি নিজেকে সারা বেলা।
             প্রশ্ন করা যেন হয়ে উঠেছে একটা নেশা।
এক দিন সব প্রশ্নের পাব জবাব , শুধু এতটুকু আশা ।




Saturday, November 26, 2011

ভাল থাকবেন!

   আজ শনিবার বলে ভাবলাম grocery র জন্য দিনটা উপযুক্ত । আগামী সপ্তাহে এক দিন ও ছুটি নেই। তাই আজকের দিনটা ছাড়া উপায় নেই।
সেই departmental store  এ শুধু একটা জিনিস ই বিরক্তিকর ! সেই সেলস গার্ল । কখনো "এটা নাও" , কখনো  ওটা । "এটা ব্যাবহার করলে তোমাকে আরও সুন্দর লাগবে"। সেখানে ঢুকলেই সে এসে দাঁড়ায় আমার পাশে আর শুরু করে তার কথা । এই করে প্রচুর টাকা প্রায় সব মাসেই পকেট থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু মুখের ওপর কারো "না" বলতে পারিনা। সেটিই সমস্যা ।
আজ সেখানে গিয়ে দেখলাম উনি ফোনে কথা বলতে ব্যাস্ত । ভাবলাম বাঁচা গেল ! আমার কেনা কাটা তাড়াতাড়ি সেরে পালাতে চাইছিলাম ।
ঠিক তখনই আমার পাশে এসে দাঁড়াল সে।  আমার পার্সটার দিকে তাকালাম। "আহারে গেল সব!"

সে বলল, "এর পরের মাস থেকে আর আমি থাকবনা। কে যে তখন তোমাকে সব জিনিসগুলো দেবে? আমি মুম্বাই যাচ্ছি । আমার ৬ বছরের ছেলের সাথে কথা বলছিলাম। খুব কান্নাকাটি করছে। আমার ক্যান্সার হেয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য যাচ্ছি ।"
মনে হল চোখটা তার ভিজে গেল কথা বলতে বলতে । কোণায় চলে গেল। আজ কিছু বেচতে চাইল না। আমি পেছন ঘুরে বললাম, "একটা ভাল moisturizer দিন তো ।" আজ খুব খুশী হয় সে।

Counter এ bill payment করে জিনিসগুলো নেবার আগে সেই মহিলাটির কাছে গিয়ে বলি, " আপনি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন । খুব তাড়াতাড়ি আপনাকে আবার এখানে দেখতে চাই । আপনি না থাকলে আমাকে বেস্ট প্রোডাক্ট কে দেবে বলুন তো ?ভাল থাকবেন।"

Saturday, November 19, 2011

ফালতু

            স্কুল এর Happy fest এর জন্য তখন ভীষণ ব্যস্ত আমি। ক্লাস এ ওদের কিছু লিখতে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে নিজের বাকি কাজগুলো করতে থাকি। না হলে সে দিন ও বাড়ি ফিরতে রাত হত।
              কিছুক্ষণ পরে দেখি সে আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। একেবারে চুপচাপ । "চুপচাপ" শব্দটা ঠিক তার ওপর  মানায়না। সারাক্ষণ ওর চিৎকার আর দুষ্টুমি , আর কিছু অযৌক্তিক বোকা বোকা কথা আর কাজ। সব জিনিসের একটা বোকা বোকা অবান্তর যুক্তি থাকে তার। জানিনা কোন জগতে থাকে। তবে তার একটা আলাদা জগৎ  তো রয়েইছে। সবাই ওকে নিয়ে মজা করে। সবচেয়ে বেশি বকা সেই খায়।  সায়ন্তিকে খুব ভালবাসে । কেও ওর সাথে সাধারণত  বন্ধুত্ত করতেও চায়না ।হয়তো তার কিছু অযৌক্তিক কথাবার্তা বা উটকো স্বভাবের জন্যে।
             আমি জিজ্ঞেস করি , "লেখা শেষ হয়েছে আয়েশা ?" সে তখনও চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। তাকিয়ে দেখি ও  কাঁদছে । কি  হল? সে কেঁদেই চলেছে। আমাদের স্কুল হেড আমার কাজ দেখতে এসেছিলেন তাকে কাঁদতে দেখে উনি বলে উঠলেন , "Don't you know that tears make you weak? Now stop crying and go your class, young lady!" কিন্তু একটা বছর ৯ বা ১০ এর মেয়েকে সেই কথাগুলি যে খুব একটা প্রভাবিত করলনা সে টা স্পষ্ট বোঝা গেল। তার কান্না থামলোনা । একটা বাচ্চাকে কিছু বোঝাবার জন্য বাচ্চাই হতে হয় । তাই আমিও ওর ভাষাতেই জিজ্ঞেস করলাম। কিন্তু আজ কোনোভাবেই যেন তাকে থামানো যাচ্ছেনা।
              ক্লাস এ এসে  জিজ্ঞেস করি, "কি  হয়েছে? ও কাঁদছে কেন?" তখন কেও কিছু না বললেও পরে পুরো ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়।


            সায়ন্তি হল মূল কারণ। এক সময় দুই জনে ভাল বন্ধু ছিল। Best Friends. আজ সায়ন্তি আর ওর দিকে ফিরেও তাকায়না। সে "সোমদত্তা" "পারমিতা" দের মত বন্ধুদের পেয়ে গেছে। আজ আয়েশা টিফিনে ওর পছন্দের লাঞ্চ নিয়ে আসলে সে খায়না। বলে , "ও সব আমি খাইনা! " আয়েশা ভীষণ ভাল ছবি আঁকে । competition এ ফাস্ট প্রাইজ জিতে সায়ন্তিকে দেখাতে আসলে সে কিছু না বলে চলে যায় । সে দিন সে কাঁদছিল কারণ , আবার সায়ন্তির সাথে কথা বলতে গেলে সোমদত্তা তাকে বলে , "আমরা তোর মত আলতু ফালতু লোকেদের সাথে মিশিনা।"
             দুই দিন আগে ক্লাস এ কপি চেক করছিলাম। আয়েশা এসে বলে,
"Will you scold me if I request you something?"

"No I won't! Tell me what do you want?"

"Will you be my best friend? I don't need them."

"Why not? sure!"

"Hey listen everyone! I don't need anyone because from today ma'am is my best friend!"

আমি ধমক দিয়ে সায়ন্তিকে বলতে পারি -"যাও কথা বল ওর সাথে।" শিক্ষিকা হিসেবে এতটুকু আদেশ করাই  যায় কিন্তু করিনি । এই ক্ষেত্রে জোর করা চলেনা । আমি সায়ন্তিকে বলি, " তোমার ওর সাথে এমনটি করা হয়তো উচিৎ নয় ।" সে বলে,"কিন্তু ম্যাম , ও একেবারে ফালতু । ফালতু কথা বলে , ফালতু কাজ করে ।"
শুনেছি ও বড়ই অভিমানী । ওর মা বলেছিলেন, " একদিন রাত্রে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পার্ক বেঞ্চে শুয়ে ছিল। কারণ মনে হয়েছিল ওর কেও নেই।"  জানিনা কেন মনে হয় ও ভাবছে সবার থেকে ও পিছিয়ে যাচ্ছে। আজকাল একেবারে পাল্টে গেছে। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীটা ই ওকে পাল্টে দিয়েছে। জানলার ধারে একা দাঁড়িয়ে থাকে। কিংবা আমার পাশে বসে আমার কাঁধের ওপর মাথা দিয়ে থাকে। আমাকে বলে, "তুমি কিন্তু সায়ন্তিকে কিছু বলবেনা। ওর দয়ার আমার প্রয়োজন নেই। ও এখনও জানেনা, ভবিষ্যতে প্রতিটি মুহূর্তে  হাজার হাজার "সোমদত্তা" ওর জন্য অপেক্ষা করছে।

ওর সাথে আরও একজনের মিল খুঁজে পাই। পুরোপুরি না হলেও বেশ অনেকটাই । এক অতি সাধারণ মেয়ের। যে বিদেশে থাকেনা। থাকে একটা ছোট্ট শহরে। যার কোন "বিদিশি" ডিগ্রী নেই। যার আয়েশার মতই কোন মূল্য নেই। এই নতুন বন্ধুর মধ্যে নিজেকে খুঁজে পেলাম। আমরা দুই জনেই ভীষণ
                                                                
                               "ফালতু!"






Friday, November 18, 2011

নবান্ন

                 প্রতিদিনের মত রোজকার ব্যাস্ততা । নতুন কিছুই নয়। এর মধ্যে কোথায় কি হচ্ছে তা জানার সময় নেই। ব্যাস্ততার  মধ্যেও  খবর শোনার একটু সময় বের করি আর কি-দেশ, বিদেশ , রাজ্য , রাজনীতি , খেলাধুলা ইত্যাদি । সবই একঘেয়ে। দিনের শেষে সেই ক্লান্ত শরীর কোন কিছু ভাবার অবকাশ রাখে না।

আজও ঠিক  একই । সব কিছু রুটিন অনুযায়ী চলছিল।  হঠাৎ  আমার এক ছাত্র বলে  উঠল - "ম্যাম, আজ জান কি? আজ নবান্ন!"  শুনে অবাক হলাম আর তার সাথে বেশ ভাল ও লাগল ; কারণ , এই প্রজন্মের ছোট শিশুরা এই শব্দটা জানে। তবে হ্যাঁ , তাদের সংখ্যাটা খুব কম ।

               "নবান্ন" শব্দটা আবার আমাকে অতীতের কথা ভাবতে বাধ্য করল। আজ থেকে অনেক বছর আগে, এই দিনে কি হত! আমি তখন আমার ছাত্রদের মতই ছোট । স্কুল ছুটির পরে গেটে বাবা বা মায়ের জন্য অপেক্ষা করতাম। বাবাই এই দিনে এসে বলতেন চল তাড়াতাড়ি ঠাম্মা বাড়ি যেতে হবে। ব্যাস কি আনন্দ! ঠাম্মার বাড়ি গিয়ে দেখি কত লোকজন !  বড় পুজো হত। আমার জ্যাঠতুত , কাকাত ভাই বোনরাও স্কুল কলেজ থেকে ফিরত। খুব মজা হত।ঠাম্মা আমাকে কত আদর করে খাওয়াতেন।

কত রকমের পদ। কি সুন্দর রান্না! তার যেন আলাদাই স্বাদ !আবার সন্ধেবেলায় বাড়ি ফিরে আসতাম। স্কুলে গল্প করতাম যা যা হয়েছে।
আজ আর "নবান্ন" নিয়ে ভাবার সময় নেই। কারও  মনেই নেই। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে দু বেলা দু পেট খেতে পেলেই যথেষ্ট ! নতুন অন্ন না কি পুরনো - তাতে কি যায় আসে? আমি সকালে কি খেয়ে বেড়ই নিজেরই ্মনে  থাকেনা। সবাই ছুটে চলেছি । পুরনো জিনিসগুলোকে অনেক পেছনে ফেলে।
               

Sunday, November 13, 2011

ভগবান কি সত্যি আছে?

           উনি কি সত্যিই আছেন?
যাকে দিয়েছ , সব দিয়েছ , যাকে দাওনি, কিছুই দাওনি ,        
            করে রেখেছ নিঃস্ব !

Sunday, November 6, 2011

            সুখী হবার উপায়, চোখ বন্ধ করে রাখ;
দেখেও দেখনা কিছু, শুনেও শুননা , বোলো না  বা ভেবনা ;
          যত অন্যায় হোক না কেন, ফিরেও তাকিও না,
নিজের আত্মায় যতই পড়ুক চাপ,
যতই প্রশ্ন আসুক মনে , চুপটি করে থাকতে বল তোমার বিবেককে ;
নিরব দর্শকের ন্যায় শুধু দেখে যাও , আর মজা করো ,
সুখী হবার উপায় , চোখ বন্ধ করে রাখ।

Saturday, November 5, 2011

অধিকার

            আমি আইনের ছাত্রী না হলেও আইনের বিষয়ে কিছু  জ্ঞান হয়তো রাখি। দেশের একজন "নাগরিক" হিসেবে  এতটুকু অন্তত  পক্ষে জানা উচিত বলে আমি মনে করি। "শিক্ষার অধিকার" আমাদের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সংবিধান আমাদের অনেক অধিকার দিয়ে থাকে কিন্তু কোনটা মানা হবে বা কোনটা মানা হবেনা সে টা জনগণের মর্জির ওপর নির্ভর করে। এদেশে সকলেরই কি শিক্ষার অধিকার আছে? "শিক্ষার" কথা আপাতত ছেড়ে দিলাম। এদেশের দরিদ্র  মানুষের স্বপ্ন দেখার অধিকারই বা  কতটুকু সে ব্যাপারেও আমার সন্দেহ আছে।

        স্কুলে ১৪ তারিখে একটা বড় অনুষ্ঠান আছে ।তাই এখন নিশ্বাস নেবার সময় টুকু আমাদের নেই। আমরা আজ মীটিং এ ছিলাম। স্কুল আজ প্রায় ফাঁকা ,শনিবার । তাই স্কুল হেড এর ঘরে বসেই দরজা খুলে মীটিং হচ্ছিল । বিভিন্ন ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছিল । বড় বড় ভিআইপি , মিডিয়া আসবে। আর mentor group এর সদস্যরা ও থাকবেন।
হঠাৎ  খোলা দরজা দিয়ে বাইরের দিকে চোখ চলে যায় । যা দেখি তা দেখে মনে হল, কেন দরজাটা খোলা ছিল! বন্ধ থাকলে হয়তো সে দৃশ্য দেখতে হতোনা । এমন কিছু নতুন না হলে ও এসব ঘটনা কিছু প্রশ্ন চিহ্ন লাগিয়ে দেয় আমাদের সমাজব্যাবস্থার ওপর। 

            দেখি এক মহিলা, পরনে জীর্ণ মলিন শাড়ি । হাতে প্লাস্টিকের প্যাকেট, উসকো  খুসকো  চুল ;সাথে একটা ছোট্ট ছেলে। ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে প্রাণপণে কিন্তু দারোয়ান কিছুতেই ঢুকতে দেবেনা। বলছে, "ও খুব ভাল পড়াশোনায় জান? ও সব পারে..."  দারোয়ান বলে, "সে হোক ! তাতে কি? যাও অন্য কোথাও !" তাড়িয়ে দেয়।

      দারোয়ানের বলা উচিত ছিল, "পড়াশোনায় ভাল মন্দ হওয়াতে কিছু যায় আসেনা,  পকেটে টাকা আছে? "
"মৌলিক অধিকার" "টধিকার" ওসব  চুলোয় যাক , টাকা দিয়ে শিক্ষা কেনাটাই আজ মৌলিক অধিকার।
আমার ভূমিকা কি?

অবশ্যই নীরব দর্শকের ।

Friday, October 28, 2011

ভাইফোঁটা

              আজকের দিনে মন খারাপ হওয়া নতুন কিছু নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই দিনটা আসলে মন ভীষণ উদাস হয়ে যায় । সত্যি কথা বলতে , ছোটবেলা থেকে বড়বেলায় আসার পর এই ঘটনা প্রায় ঘটে । কিছু একটা ছোটবেলায় ছিল যা এখন ভীষণ মনে পরে। 
              ছোটবেলায় আমি বাবাই এর সাথে ঠাম্মার বাড়ি(Talukdar house)  যেতাম । আমি দৌড়োতে দৌড়োতে গিয়ে জড়িয়ে ধরতাম। ওনাকে দেখে মনে হতো -কোন এক রানী সিংহাসনে বসে আছেন। তার চারিদিকে ঘিরে থাকতো আমার খুড়তুতো পিসতুতো ভাই বোনেরা ; উনি এমন মানুষ ছিলেন যিনি পরকেও আপন করে নিতে পারতেন। উনি সারা জীবনে কতো মানুষকে নতুন জীবন দিয়েছিলেন তা হয়তো নিজেও জানতেন না। এক সময় আমাদের জমিদার বাড়িতে নিচু জাতি বা অন্য  ধর্মের মানুষের প্রবেশ নিসিদ্ধ ছিল। উনি সমস্ত সংকীর্ণতার বেড়া ভেঙ্গে ছিলেন। বাড়িতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের প্রবেশের পথ খুলে দেন।


 কথা  হচ্ছিল ভাইফোঁটার । সকলকে ফোঁটা দেওয়া হত। দাদারা কেও দশ, কেও কুড়ি টাকা  দিত। সেটা নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আইস ক্রিম বা কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতাম সবাই মিলে। তার পর পাঁচিল বেয়ে একবার গার্লস স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করেছিলাম । অনির্বাণ আর অভিষেক -আমার চেয়ে ৪ বছরের বড় , দুষ্টুমি করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল। আমি কাঁদতে কাঁদতে ঠা ম্মার কাছে নালিশ করি । তার পরে দুই জনের কি হয়েছিল তা ওদের সারা জীবন মনে থাকবে। কান ধরে উঠ বস করিয়েছিলেন। উনি আমার জন্য নতুন জামা লুকিয়ে রাখতেন কাওকে না দেখিয়ে ।চুপটি করে দিয়েদিতেন ।
দুপুরে জমিয়ে খাওয়া । পোলাও , গলদা চিংড়ি , মাংস আরও কতো কি! বাড়িতে কি হৈ চৈ । দুপুরে লড়াই হতো কে ঠা ম্মার পাশে শোবে।
বাবাই, জ্যাঠামশাইরা , দাদু, ছোট দাদু, কাকুরা খেলার আলোচনা , তর্ক বিতর্কে ব্যস্ত থাকতেন। ইস্ট- বেঙ্গল , মোহনবাগান নিয়ে বিতর্ক ছিল তুঙ্গে ।
সোনামা মানে আমার মেজ জেঠীর আদর খেতে খুব ভাল লাগত। 


আমি আর অভিষেক দুষ্টুমির নতুন নতুন উপায় খুঁজতাম । ও মেঝেতে পাওডার  ফেলে রাখত । আমারা বিছানার তলায় লুকিয়ে থাকতাম 'দেখি কে আগে পরে' । আমাদের দুষ্টুমি থামানোর জন্য লাল কাকা আমাদের বই এর দোকানে নিয়ে যেতেন । আর প্রচুর গল্পের বই কিনে দিতেন । ব্যাস আমরা চুপ । আমাদের কাকিমা শান্ত ভাবে বই পড়তে দেখে বলতেন, "এরা কে? এতো শান্ত ! এদের তো চেনাই যায়না !"
মহুয়া দিদি কে দেখে ভাবতাম-কি সুন্দর দেখতে ও ! ওর মুখে বিউটি স্পট ছিল। আমি পেন্সিল দিয়ে সে রকম আঁকার চেষ্টা করতাম। সবাই কি হাসত ।
বিকেলে একটা ছোটখাটো অনুষ্ঠান হতো ;যে যা  পারে তা তাকে করে দেখাতে হতো ; কেও নাচ , কেও গান, কেও তবলা । মেজ জ্যাঠামশাই সব সময় একটাই গান আমাকে গাইতে বলতেন-" এই লভিনু সঙ্গ তব"। ঠাম্মা বাবাই কে বলতেন , "ওরে মিলন, মিমিকে classical music শেখা ! ওর গলা ভীষণ ভাল।"
সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি ফিরতে বড় মন খারাপ করতো।
আজ অনেক বছর কেটে গেছে । আজ ঠাম্মা , দাদু, লাল কাকা, মেজ জ্যাঠামশাই কেও নেই। রীতিনীতি আজও আগের মতো কিন্তু নেই সে আন্তরিকতা , সেই ভালোবাসার ছোঁয়া , না সেই শিশুসুলভটা ।
আমরা বড়ো হয়েগেছি । নিজের নিজের কর্ম জীবনে ব্যস্ত ।
এই দিনে মন উদাস থাকার কারণ হয়তো  এই নয় যে আমার কোন ভাই নেই। যা নেই , তা নিয়ে আফসোস করা অযৌক্তিক । মন খারাপ হয় পুরনো দিনগুলিকে হারিয়ে ।

Wednesday, October 26, 2011

শৈশব ও ভবিষ্যৎ

শৈশবের জগৎ টা থেকে এক দিন দিই ভবিষ্যৎ জগতের দিকে উঁকি ,
এ যেন এক অচেনা অজানা জগত দেখি।
 কতো অজানা জিনিস, চোখ ধাঁধানো আলো ,
কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখি , সবই নতুন , সবই ভীষণ ভাল ।
সেই ভবিষ্যৎ জগৎ  যেন দেয় হাতছানি ,
উড়ে যেতে চায় সে দিকে আমার ছোট্ট মনখানি ।
আমি বলি , "একটু দাঁড়াও ! করো একটুখানি অপেক্ষা ;
কালের নদীতে খেয়া বেয়ে একদিন বড় হয়ে যাব ;
সে দিন নিশ্চয়ই তোমার জগতে গিয়ে পৌঁছব ;
একদিন হয়তো শেষ করে ফেলবো সম্পূর্ণ encyclopedia ;
সে  দিন পাল্টে যাবে সব কিছু,
হয়তো সে দিন থাকবেনা এই শিশুসুলভতা , থাকবেনা এই নিস্পাপ মন।
তবে কালের নদী্তে  জ্ঞানের তরী বেয়ে দেখো এক দিন ঠিক পৌঁছে যাব সেখানে;
সে দিন ঠিক হবে দেখা ;তাই বলি ,'একটু দাঁড়াও ! করো  একটু  খানি অপেক্ষা !





Saturday, October 22, 2011

আমায় ডাকে

        এই নিষ্ঠুর জীবনযন্ত্রের জাঁতাকলে পিষে,
নিজের সব স্বপ্ন , ইচ্ছেগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়ে,
বীভৎস  বাস্তবের মুখমুখি হয়ে জীবনকে বলি ,
"তুই  কুৎসিত !  তুই নিষ্ঠুর ! তুই হৃদয়হীন! "
আশার আলো মনে হয় ধীরে ধীরে হয়ে আসছে ক্ষীণ!
যখন হারিয়ে যাই,শব্দ কোলাহল মানুষের ভিড়ে,
ভাবি কবে জীবনের এই তরী কবে আসবে তীরে।
নিজেকে উন্মাদের মত খুঁজেও যখন পাইনা খুঁজে,
তখন জীবনকে বলি -"তুই কুৎসিত !"
আমি যতই তাকে ঘৃণা করি সে ততই দূরে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসে;
সে হাতছানি দিয়ে ডাকে , বলে -"কাছে আয় ! "






Thursday, October 6, 2011

রূপকথা ও বাস্তব

                রূপকথার গল্প পড়ার নেশা ছোটবেলা থেকে!
তাই একটা "রূপকথার" গল্প হিসেবে কল্পনা করি এই জীবনটাকে,
             কিন্তু রূপকথা আর বাস্তব কি  এক দুটোই?
                       তার উত্তর কই ?
গল্পের সেই পক্ষীরাজ ঘোড়া , আর সেই রাজপুত্তুর;
কেমন সে রাক্ষসদের হারিয়ে নিয়ে যায় রাজকন্যাকে ।
" আর তার পর তারা সুখে শান্তিতে থাকে  ।"
হয়তো সেই রাজপুত্র আছে কোথাও দূর দেশে,
 এই আশায় দিন যায় ভেসে ।
ছোটবেলা থেকে যখন  বড়বেলায়  পৌঁছলাম ,
দেখি বাস্তব জগৎ টা রাক্ষসে ভর্তি ;
কই সেই রাজপুত্র?
সেই অপেক্ষায় আছি বসে। 
সে আসবে কি আসবেনা, সে রহস্য  যে অজানা ;
এই পার্থক্য বাস্তব আর রূপকথার হয় ।
"সুখ " আর "শান্তি " শব্দ দুটো রূপকথাতেই মানায়।


Saturday, September 24, 2011

               জীবনের এক চরম  পরিণতি ,
ভাবতে বসি কারণ , "কেন এই আবনতি ?"
কথায় আছে , "বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে মেলা ভার",
             ভাবি বিশ্বাস ই প্রতারণা করেছে বার বার।
তাও ভুল কেন করেছি আবার?
সাঙ্গ করেছি সব খেলা ,
তবুও  মেনে নিয়েছি  সব অবহেলা ।

Saturday, September 17, 2011

মুক্তাঙ্গন

              প্রতিটি মানুষেরই নিজের নিজের জগৎ  রয়েছে- একটা পরিচিত জগৎ যা ভীষণ চেনা । নিজের পরিবার , "life style" -আধুনিক প্রযুক্তি -টেলিভিশন , ইন্টারনেট , শপিং মল - এই সব আর কি। আমাদের এই জগতের বাইরেও আছে একটা অন্য জগৎ,। দুই দিন আগে সেটা খুব কাছ থেকে দেখলাম।

                গত বুধবার রক্তিমের জন্মদিন ছিল। সে ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের এক মাত্র আদুরে ছেলে। শুধু সেই বা কেন? শহরের এক বড় দামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে "গরীবের ঘরের" ছেলে পাওয়া যে অসম্ভব সে আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তা সেদিন তার জন্মদিনে ক্লাসের সবার জন্য প্রচুর চকলেট , ক্যান্ডি , কেক -এনেছিল।
এত কিছু করার কি প্রয়োজন ছিল তা জিজ্ঞেস  করলে , সে বলে, "My dad is the world's best dad! Don't worry about the expenses! On my 18th birthday, he promised me to gift a car! These are just nothing!"


PT class এ স্নেহার চশমাটা খুলে মাটিতে পরে  যায় , আমি বলি, "যদি ভেঙ্গে যেত, তবে কি হতো? " সে বলে , "কি আবার হতো? Mom অন্য একটা কিনে দিত।"

পুজোর সময় কে কটা জামা কিনেছে এবং কতো টাকার জামা কিনেছে- তার বড়াই করতে কেও পিছিয়ে নেই।
এ হল আমাদের জগৎ । এক চেনা দুনিয়া।

ষোল তারিখের যন্ত্র উৎসব নিয়ে আমাদের সবার ভীষণ কৌতূহল ছিল। সামনে  half yearly exams তাই কোনও রকমে চেষ্টা করছিলাম যাতে ওদের মনঃ সংযোগ  বিঘ্নিত না হয়। কাজটা কঠিন ছিল  বটেই কিন্তু হঠাৎ  স্কুল হেড কাজটা আরও কঠিন  বানিয়েদিলেন । (যে টা মোটেই নতুন ছিলনা) । উনি বললেন , "নৃত্য শিক্ষক "মুক্তাঙ্গন" থেকে কিছু অনাথ ছেলেদের নিয়ে এসেছেন। ওদের সাথে আমাদের ছেলে মেয়েরা perform করবে। ওদের hall এ যেতে  বল।" ওরা চলে যাবার পরে আমাকে বলা হল - Quiz contest এর জন্য প্রশ্ন তৈরি করতে হবে। উনি ঠাট্টা করে বলেন, "ড্রাগস কোন জিনিস দিয়ে তৈরি হয় ? এসব প্রশ্ন করো ।" অবাক হই । উনি বলেন, "এরা বেশির ভাগই নেশাগ্রস্থ । ড্রাগস , dendrite এসবের নেশা করে । সকালে ট্রেনে ট্রেনে ঝাট দেয় । তাই বেশীর ভাগ প্রশ্ন ট্রেন ভিত্তিক হওয়া চাই '"


আমি প্রশ্ন তৈরি করতে যখন মগ্ন, ঠিক সেসময় আমার ক্লাস এর পারমিতা এবং আরও কয়েকজন দৌড়তে দৌড়তে আমার কাছে আসে। "Ma'am who are they?They are so horrible and weird ! We are so scared! We can't perform with them! Ewwwww! They are spreading germs I guess! See?my hands are itching!"

কেও কেও রীতিমত কান্না কাটি জুড়ে দিল ! কেও কেও ভয়ে বাথরুমে লুকোয়  । মনে হল , "অনেক হয়েছে , এবার আমাকে ময়দানে নামতেই হচ্ছে ।" সবাইকে ধরে নিয়েগেলাম নীচে ।

                        হ্যাঁ , ওরা আলাদা। আমাদের মতো নয় । এবং ওদের "alien" বললেও , খুব একটা ভুল হবেনা। তবে ওরাও আমাদের দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে চেষ্টা করে ওদের দুই পক্ষেরই ভয় কাটাবার চেষ্টা করি । তার পর তাদের নাচ শুরু হয়। শেষে তারা বিভিন্ন ক্লাস ঘুরে ঘুরে দেখতে শুরু করে । ততক্ষণে আমাদের ছেলে মেয়েরাও অনেকটাই বন্ধুত্ত করে ফেলেছে তাদের  সাথে। তারা একসাথে  গামেস খেলে , গল্প করে ।
"ওদের বাড়ি ঘর নেই। বাবা মা নেই-দামি জামা কিনেদেবার জন্য বা ভালবাসার জন্য। জন্মদিনের পার্টি তো দুর , তারা এও জানেনা যে তাদের জন্ম হয়েছে কবে? তবে ওদের প্রতিভা বেশ অবাক করে দেয় আমাকে এবং সবাইকে।  বোর্ডের ওপর একটা ছবি আঁকে ।সত্যি অবাক হই। তারা আরও কি কি করতে পারে তার গল্প বলে।

যন্ত্র উৎসবের দিন  তারা প্রমান করে দেয় যে তারা কোনও অংশে "আমাদের জগতের" কারও থেকে কম নয়। যাবার আগে আমাকে দুটো নিজেদের হাতে আঁকা ছবি দেয়। সবাই মিলে নাচ করে, "এবার তোর মরা গাঙে  বান এসেছে; "জয় মা" বলে ভাসা তরী ।"

বলে, "দিদিমণি , আমরা আসলাম , এবার আপনাকেও আসতে হবে মুক্তাঙ্গনে। " কথা দিতে পারিনি কিন্তু তাও মনে মনে কামনা করি , "তোমাদের প্রতিভা যেন কোন দিন হারিয়েনা যায় । এই নিষ্ঠুর জগতের সাথে লড়তে গিয়ে। নিজেদের জগতে উড়ে বেরাও ডানা মেলে। প্রাণভরে বাঁচো -তোমাদের মুক্তাঙ্গনে ।





Sunday, July 31, 2011

পুতুলের ইতিকথা

 আমি একটা নতুন খেলার পুতুল;সবাই আমাকে ভালবাসে।
কখনো হাতে তুলে আদর করে , কখনো খেলে,
কখনো সুন্দর করে সাজিয়ে রাখে ওই সো কেস টার মধ্যে, আবার কখনো বা রাগ হলে
বাড়ির ছোট্ট মেয়েটা দেয় ছুঁড়ে ফেলে।যখন যা ইচ্ছে তাই করে।
যখন কোন অতিথি আসে ঘরে, সবার নজর আমার দিকেই পরে।

বছরের পর বছর ধরে এক জায়গায় এক ভাবে সবার মনোরঞ্জন করে  চলেছি আমি।
একদিন পুরনো হয়ে যাব। সময়ের ধুলো জমে যখন সব কিছু শেষ হয়ে যাবে;
তখন আর কারো নজর পড়বে না আমার দিকে।
আর পরলেও সে বলবে,"ছিঃ! কি নোংরা পুরনো পুতুল!"
একদিন যখন ফেলে দেবে ডাস্ট বিনে, সে দিন হয়তো ওরা 
কেও আমার কথা মনেও রাখবে না। আমার জায়গার বসবে অন্য কেও এসে।
সে দিন ই হয়তো মুক্তির স্বাদ খুঁজে পাব। হয়তো সেই আবর্জনায় খুঁজে  পাব,
আমারই মত ফেলে দেওয়া কোন বন্ধুকে। 



Sunday, June 5, 2011

দুর্যোগ

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ , আচমকা নেমে আসে এক দমকা বাতাস।
নিয়ে যায় মুখের হাসিটাকে উড়িয়ে ;
জীবনের সব আশা আকাঙ্ক্ষা -সব কিছুকে যেন দেয় পুড়িয়ে ।
এ যেন নিয়তির কোন নিষ্ঠুর পরিহাস 
শেষ সম্বল টুকু হারিয়ে, রিক্ত হাতে দাঁড়িয়ে
আজ আমি সেই নিষ্ঠুর নিয়তির দাস।
জানিনা কখন এসেছিল সেই ঝড়,
 ভেঙে দিয়েগেছে সেই স্বপ্ন দিয়ে গড়া তাসের ঘর।  
অন্ধকারে মরিয়া হয়ে খুঁজছিলাম যে আলো খানি,
দুরে , বহু দুরে সে দিচ্ছে হাতছানি।




Monday, May 30, 2011

লড়ছেন কাদের জন্য??

আনেক দিন পরে lunch invitation এ বিকাশ দা দের নতুন বাড়িতে গিয়েছিলাম। সে বিশাল এক বাড়ি। সমস্ত আসবাবপত্র ও বিদেশী। সে দারুণ ব্যাপার! দেখি বিকাশ দা বসে বসে নোট গুনতে ব্যাস্ত। আমায় বলেন, "আসলে বাজার বড় মন্দা বুঝলি? এর মধ্যে কি করে চলবে সেটাই ভাবছি।"
আমি একটু অবাক হই। "বাজার মন্দা?" আমি জিজ্ঞেস করি," তুমি কি কোন business শুরু করেছো নাকি? আমি তো জানি তুমি এক জন সরকারি অফিসার।"

 উনি বলেন, "আরে না না! আমার পেশা আমি পাল্টাই নি। যা ছিলাম তাই আছি রে। আমি বলছি লোক জন এখন খুব সেয়ানা হয়ে গেছে। অত সহজে ট্যাঁক থেকে কিছু বের করেনা আজ কাল। আগের সে যুগ আর নেই বুঝলি?"
আমি বলি, "তা বাড়িটা তো একেবারে ফাটাফাটি করেছো। বাজার মন্দা থাকলে করতে কি করে?"
ঠিক সে সময় বিকাশ দা র স্ত্রী বলেন, "এটা কি একটা বাড়ি হয়েছে নাকি?"
আমি অবাক! তা আমাদের মতো দেশে কোন সরকারি অফিসারের মুখ থেকে এসব শোনা টা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। বরং না শোনাটা ই "অস্বাভাবিক"।

শহরের এক ঝাঁ চকচকে  shopping  mall এ বাজার করার সময় দেখি একজন কে। নাম- রবি সরকার। পেশায় "সরকারি পিওন।"  তার ছেলে মেয়ে পড়ে শহরের এক দামি ইংরেজি স্কুলে। তার "life style" দেখলে সেটা বোঝা ভার যে সে "পিওন"!
দেশে যখনই ভ্রষ্টাচার র সম্পর্কে বলা হয় তখন মাথায় আসে, "2G spectrum" / common wealth games মত কিছু ঘটনা। মাথায় আসে ভ্রষ্ট কিছু নেতা বা  kalmadi র মত কিছু মানুষের কথা।
আচ্ছা ভারত বর্ষে এমন কতো  কোটি - বিকাশ দা বা রবি সরকার আছে সে খেয়াল কেও রেখেছে কি? বা সব দোষ রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চাপিয়েই খালাস?
লোকপাল বিলের সমর্থনে যারা লড়ছেন, বা আন্না হাজারের মত মানুষেরা যারা নিজেদের কথা ভুলে লড়ে চলেছেন দেশ কে দুর্নীতি মুক্ত করতে, তাঁরা লড়ছেনই বা কাদের জন্য?


Friday, April 29, 2011

চোখের জলটা

 এক ফোঁটা জল চোখ দিয়ে পড়ল;
এইতো কিছুক্ষণ আগেই বেশ  হাসছিলাম , মেঘে মেঘে
কেমন দৌড়ে বেড়াচ্ছিলাম। নীল আকাশটাকে ছুঁতে পারছিলাম,
পাখিদের সাথে কত কথা  বল্লাম;
চোখের জলটা এলো কত্থেকে ?
মনে পড়লো, আসলে চোখে ছিল স্বপ্নের আস্তরণ,
মনে পড়লো ঘুমিয়েছিলাম এতক্ষন।


Saturday, April 2, 2011

ভোট পুজো

   আচ্ছা বলুনতো দুর্গাপূজা, ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ এর সাথে ভোটের কি মিল? আরে মশাই excitement..."কি হবে ? কি হবে?" সবার মনে একটাই প্রশ্ন। পাড়ার চায়ের দোকান হোক বা আপিস-কাছারি (office),এমনকি Social networking sites গুলোতে ও নিস্তার নেই। খবরের কাগজের পাতা ওলটালেও কিংবা টি ভি তে news channels ও ওই এক খবর। "বাম না ডান; ডান না বাম" এর লড়ালড়ি। দুর্গা পূজার আগে প্যান্ডেল বাঁধা, প্রতিমা বানানোর কাজ ইত্যাদি। তেমনই ভোটের আগেও দেওল লিখন, মিটিং- মিছিল ,প্রচার, "ভোট দিন, ভোট দিন" স্লোগান রাস্তায় রাস্তায়- লেগেই আছে।
এ সব দেখে ছটু  মিস্ত্রি বলে, "এ সব দেখে আমার কি হবে? এতটা বছর এই ভাবেই কেটে গেল। কে আসল, কে গেল সে দেখে আমাদের কি হবে? আমরা দিন আনি দিন খাই, দু বেলা দু মুঠো খাবার ছেলে মেয়েদের মুখে তুলে দিতে পারলেই হল। সেটাও তো কোন কোন দিন হয়ে ওঠেনা। এসব দেখে আমাদের লাভ নেই।"
পাড়ার চায়ের দোকানে আড্ডা টা জমে উঠেছিল বেশ। মনা কাকু, ভাল নাম মনতোষ দত্ত। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বললেন, "আরে ছাড়ত এ সব। সবাই এক। আর একটা middle class মানুষের জীবনে কি পরিবর্তন হবে? বাজারে যাও, আগুন জ্বলছে সেখানে। ছেলে মেয়ের পড়াশোনার খরচ, আরে পেট্রোল ডিজেলের দাম ছেড়েই দিলাম , কিন্তু রান্নার LPG র দাম তো আকাশ ছোঁয়া। এ যেন যুদ্ধ চলছে।"

এই ভোট পূজো র center of attraction হল গিয়ে এই সব  vote nominees রা। বেশ লোকের বাড়ি বাড়ি door to door sales man র মত ঘুরে বেড়াচ্ছেন, বাচ্চাদের কোলে নিয়ে আদর করছেন, সবার কাঁধে হাত রেখে বন্ধুর মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ২৪ ঘণ্টা মুখে হাসি। হাসি সত্যি সত্যি পাচ্ছে কিনা কে জানে? কিন্তু হাসিটা must...
 এই সব হবু MLAs রা বেশ মজার। পাড়ার ন্যাপলা র কাঁধে হাত রেখে বলেন, "নেপাল বাবু, কেমন আছেন?" ন্যাপলা শুনে অবাক! "নেপাল বাবু?" হবু MLA এত সম্মান দিয়ে কথা? এ যেন হাতে চাঁদ পাওয়া। সে বলে, "হেঁহেঁ ভালই আছি।" শুনে হবু MLA আঁতকে উঠলেন- "না না এ ভাল থাকা নয়। জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে, corruption এ দেশ টা শেষ হয়ে গেল। একে ভাল থাকা বলেনা নেপাল বাবু; এ সবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা ক্ষমতায় আসলে corruption দূর হয়ে যাবে, শিক্ষা- সাস্থ পরিসেবা সে সব নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা। যাতায়াত বা যানবাহন ?কুছ পরোয়া নেই। রাস্তা র পর রাস্তা বানাব। সবাই কে রাস্তায় নামিয়ে আনব। বাড়িতে বাড়িতে helicopter থাকবে। আপনি বাজার যাবেন helicopter চরে। ব্যাস ভোট টা আমাদেরই দেবেন কেমন?" এই হল তফাৎ হবু আর হয়েগেছে MLA র মধ্যে।
কিন্তু বন্ধুগন এই offer শুধুমাত্রlimited সময় অবধি। ভোটের পরে এই offer এর validity থাকবেনা।কাজেই এর লাভ ওঠান। ভোটের পর এঁদের কাওকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
কে আসলো, কে গেলো সে না ভেবে আপাতত পুরো ব্যাপারটাকে enjoy করি। ভোট ও কোন উৎসবের কম নয়।

Wednesday, March 30, 2011

লুকোচুরি খেলা

হয়তো তোমার মনে আছে , আমরা দুইজন আর আমাদের খেলা।
 আমাদের সবচেয়ে প্রিও সময়। সারা দিন শুধু খেলে খেলে বেড়ানো।
আর খেলতে খেলতে সবকিছু ভুলে যাওয়া।
একদিন খেলাটা জমে উঠেছিলো বেশ! সেই আমাদের লুকোচুরি খেলা।
আমি গেলাম লুকোতে, ভাবলাম খুঁজবে তুমি।
লুকিয়ে লুকিয়ে কেটে গেল বেশ কয়েকটা ঘণ্টা ,
তুমি তো আর এলেনা। বেরিয়ে এসে দেখলাম তুমি আর নেই।
ভাবলাম এ হয়তো তোমারই বানানো নতুন কোন খেলা।
শুরু করলাম খুঁজতে তোমায়।  মাঠেঘাটে বনে জংলে।সব খানে;
পেলামনা খুঁজে।
এভাবে কেটে গেলো কতোটা বছর।
কিন্ত ক্লান্ত হইনি, খুঁজেই চলেছি।
একদিন পেলাম তোমায় দেখতে,
দূর থেকে দেখলাম তোমায়, আজ ও খেলছ সেই এক খেলা।
কিন্তু আশেপাশে এরা কারা? কিছু অচেনা অজানা মুখ।
আজ মেতেছো  ওদের সাথে খেলায়।
বুঝলাম আজ আর প্রয়োজন নেই তোমার আমাকে।
ওদের সাথেই খেলা চলছে বেশ।
এবার আমার যাবার পালা।
আমাদের সেই খেলা হয়েছে শেষ।








Friday, March 11, 2011

অন্ধকার

অন্ধকারটা ভীষণ ভাল লাগে;

জীবনটা যখন সবকিছু পুড়িয়ে  ছারখাড় করে দেয়,
এই অন্ধকারটা কাজ করে এক Fire Extinguisher-এর ন্যায়;
জীবনের  প্রবল দাবদাহ থেকে সব সময় বাঁচায়।
এর ছোঁয়ায় যেন সব শান্ত হয়ে যায়।


অন্ধকারটা  ভীষণ ভাল লাগে;

কিন্তু হঠাৎ কেও  আলো জ্বেলে দেয়।
মনে হল কিছু কাঁচের টুকরো এসে পড়ল চোখে
তাকাতে খুব কষ্ট হয়;
অন্ধকার জগতটা বড়ই ভাল।
এই চোখ দুটো কেন জানিনা দেখতে চায়না পৃথিবীর কোন
ঝাঁ চকচকে আলো; তাকাতে যে ভীষণ কষ্ট হয়।
 এই অন্ধকারেই যেন এক সুপ্ত আশার আলো জাগে,
হয়তো সেই জন্যই অন্ধকারটা এত বেশি ভাললাগে।







Sunday, February 13, 2011

Valentine's day-Ami o ora

Shohorer gift shops gulote akhon fatafati byapar. Ar kono dokane bhir hok na hok oi gift stores gulor malikder romroma!"Mullobriddhi" jak chuloy. Tar kono poroya nei..Ta hokna sheshob gifter dam akash choa-kissu eshe jayna tate. Chakurijibider kotha chere dilam-Ashi notun projonmer chele meyeder proshonge. Pocket e taka thak na thak-girl friend ke gift to dite hobe? Tar jonno ache hoy baba r pocket kata ar ta na hole bondhu r kach theke dhar chaowa.-She onek upay ache.

Are ami kotha bolchi Valentine's day r bapare.PREMER DIN. Oi shobe dhon neel moni akta din! Ar baki 364 ta din ki dosh korlo ke jane??
Nochiketa r akta ganer line mone pore jay-"Bekar jubok der shantona akta e chakrir bodole ache prem". Amar moto "single" lokeder kache byapar ta golmele. Loke bole -"Ar koto din single thakbe? Ebar prem tem kichu koro". Ami boli, "She na hoy korbo but tar age je shob prosnogulo mathay jome ache shegulo r shomadhan kori". 
"Prem" ta ashole ki?Ei proshno ta niye jai shobar kache. ORE BABA! E bapare to shob ak ak jon expert!"
Ak party te ak jon purono bondhuke dekhi moddop obosthay. Onek din por dekha.
Amake bole-"Koto din por dekha tor shathe! Ta akhono single? Amio single."
Ami obak holam shune. O ar or bandhobi r prem er golpo ak shomoy bikkhato chilo. Ami jiggesh kori-"kano tor girl friend er ki holo?"
O bole -"Amake chere ak boro lok er shathe chole gache."
POOR FELLOW! Ar kichu bolar nei... Shekhane kichu dure dariye ak jon amader kotha shunchilo. She egiye eshe bole-
"Chill! Ami goto 4 mash dhore Bishakhar shathe chilam. 4 MASH! Bhabte paro??!! Bore hoyegiechilam. Aj onno kaoke peyegechi. Tai boli partner paltate thako. Spice up your life!"
Eder kache amar proshner uttor je nei sheta khub shposhto..
Amar ak relative biye r jonno meye khujche. She gaan kore-"Koi na koi chahiye pyar karnewala"..Ami take "prem" er byapare jiggesh korle she bole..
"Chokh hobe Aishyarya r moro; Mukh Katrina r moto, Attitude Prianka r moto etc etc.. 
Computer e photoshop kore akta print out ber kore nile e kella fote. Bastob jibon eo jodi amonta hoto tobe besh hoto kintu.
Jai Piyush ar Diya r kache. Ora holo giye "made for each other " couple. Oder kache-"Prem biye holo giye enjoyment er bostu. Jibon ta enjoy korar jonno. Eshob na hole jibon ta boring!"


Piyush ar Diya r "made/mad for each other" couple theke ektu alada holo Supid ar Ratna r golpo. Ora bishshash kore open relationship e. Oder kacheo -"Jibonta enjoyment er bostu". Tate "loyalty" ba "bishshoshtota" shobdo ta r kono byabohar hoyna.
E shob notun projonmer manush der theke jokhon purono projonmer manushder kache jai, tader mota mot ei byapare onekta e alada bola jete pare.Tobe tara ak byapare ak mot-"E juger chele meye der kache prem ta akta chele khela. Er mane era bojhe na. Bhalobasha mane sacrifice. Nijeke bhool e onno ke bhalobasha."
Aro onek kichu... Jakge ami bhishon confused. Kar kotha shuni?


Baki der moto amio chole gelam gift store e. Akta gift o kine fellam. Tobe sheta kar jonno? Apatoto nijer jonno. Nijeke e ba kota manush bhalobashte pare?

Saturday, January 29, 2011

Shei Chobita

Onek din age, janina kon shomoy kon din kon shale,
hothat ak din ichche holo akta chobi ankar.
Onek bhebechinte shuru kori anka,onek rong diye;
she chilo amar kolponar rong;
Kokhono bastob, kokhono ba ajgubi shob chinta.
Anka shesh hole sheta lukiye rekhe chilam moner ak konay;shobar chokh eriye.
Sheta chilo shudhu amar.
Kono art exhibition er dewale tangano chilona;
ar na kono dino cheyechilam shetake ponno hishebe bikri korte..
Sheta bakider kache kamon tar porowa kono din e korini.
Sheta chilo shudhu amar.Chilo amar moner ak konay lukano.

Hothat ak din dekhi chobita chire gache,
keo tate kali dhele, chire noshto koredieche.
Chokher shamne chera kagojer tukrogulo ke pore thakte dekhe
koranor chesta kori pagoler moto.

Kintu hate ashe noshto hoyejaowa chobir shudhu tukrogulo..











Tuesday, January 18, 2011

আয়না

আয়নাটার দিকে তাকিয়ে দেখি আর ভাবি,
 এ বড় অদ্ভুত জিনিস , সবাইকে নিজের আসল চেহারা দেখায় ;
বিনা ভেজালের স্বচ্ছ প্রতিবিম্ব। 
মনে হল দেখিইনা এক বার তার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের আসল চেহারা;
নিজের আসল প্রতিবিম্ব! 
কিন্তু কেন জানিনা তার সামনে দাঁড়িয়ে আর যেন নিজেকে খুঁজে পাইনা।
এ যেন অন্য এক চেহারা!
ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত , ভীত , কুৎসিত এক চেহারা!
চোখের কোণে কালিটাও খুব স্পষ্ট !
নিজেকে এতটা কুৎসিত বলে তো জানতাম না আগে;
পরে বুঝলাম এ আয়না হল মনের আয়না!
পৃথিবীর যে কোন আয়নার চেয়ে স্বচ্ছ ।
এ শুধুই  বলে অপ্রিয় সত্য ।